সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : দুইশ রানের কাছাকাছি পুঁজি নিয়েও খুব একটা লড়াই করতে পারল না ঢাকা ডায়নামাইটস। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ছন্দে থাকা অ্যালেক্স হেলস খেললেন আরেকটি বিধ্বংসী ইনিংস। শুরুর বিপর্যয়ের পর দুই জনের খুনে ব্যাটিংয়ে বড় জয় পেল রংপুর রাইডার্স। ঢাকাকে হারিয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল নিল প্রথম দেখায় হারের মধুর প্রতিশোধ।
বিপিএলে সোমবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছে রংপুর। ১৮৭ রানের লক্ষ্য বল ১০ বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। এই জয়ে রংপুর উঠে গেল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
তৃতীয় উইকেটে ৯৯ বলে রেকর্ড গড়া ১৮৪ রানের জুটিতে ব্যবধান গড়ে দেন ডি ভিলিয়ার্স ও হেলস। ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট থেকে আসে এবারের আসরের পঞ্চম সেঞ্চুরি। বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান ৫০ বলে ৮ চার ও তিন ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১০০ রানে।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয় ঢাকার ব্যাটসম্যানদের। প্রথম তিন ওভার থেকে আসে কেবল ৯ রান।
মাশরাফির করা চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে পয়েন্টে হজরতউল্লা জাজাইয়ের ক্যাচ ছাড়েন শফিউল ইসলাম। সে সময়ে ১৩ বলে ৪ রানে ব্যাট করা আফগান বাঁহাতি ওপেনার চড়াও হন নাহিদুল ইসলামের ওপর। অফ স্পিনারের ওভার থেকে আসে ১৮ রান।
বোলিংয়ে এসেই আঘাত হানেন ফরহাদ রেজা। পেস বোলিং অলরাউন্ডারের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল তাড়ায় ফিরে যান জাজাই। ভাঙে ৩৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। সেই ওভারে রেজাকে ছক্কা-চার হাঁকানো সুনিল নারাইনকে পরের ওভারে বিদায় করেন নাজমুল ইসলাম অপু।
ত্রিজে গিয়েই শট খেলতে শুরু করেন সাকিব আল হাসান। দ্রুত জমে যায় রনি তালুকদারের সঙ্গে তার জুটি। তৃতীয় উইকেটে ২৮ বলে যোগ করেন ৫৪ রান। ১২ বলে চারটি চারে ২৫ রান করা সাকিবকে বোল্ড করে ফেরান রেজা।
একটি করে ছক্কা-চারে ৮ বলে ১৪ রান করা বিপজ্জনক আন্দ্রে রাসেলকে বিদায় করেন মাশরাফি। সীমানায় বেশ কিছুটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নেওয়া রেজার অবদানও এতে কম নয়।
১৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩০ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড়ানো ঢাকা শেষটায় তুলতে পারেনি প্রত্যাশিত ঝড়। রনি ৩২ বলে ছয় চার ও এক ছক্কায় ৫২ রান করে ফিরে যান। দ্রুত তাকে অনুসরণ করেন শুভাগত হোম।
থমকে যাওয়া রানের গতিতে দম দেন কাইরন পোলার্ড। ২৩ বলে পাঁচ চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৫২ রানে। তার ঝড়ো ইনিংসের পরও শেষ ৭ ওভারে ৫৬ রানের বেশি তুলতে পারেননি ঢাকা।
রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। দ্বিতীয় ওভারে পরপর দুই বলে ক্রিস গেইল ও রাইলি রুশোকে ফিরিয়ে দেন রাসেল। গেইল ফিরেন ১ রান করেন। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রুশো পান গোল্ডেন ডাকের স্বাদ।
মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে রাসেলকে ছক্কায় উড়িয়ে শুরু করেন ডি ভিলিয়ার্স। দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে এই ব্যাটসম্যানের হাত থেকে নিস্তার পাননি কেউই। শুরু থেকেই উত্তাল ছিল ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট। ২৪ বলে তুলে নেন ফিফটি। সেঞ্চুরিতে যান ৫০ বলে।
অন্য প্রান্তে ঝড় তুলেন হেলসও। দ্রুত জমে যায় তাদের জুটি। ৩৩ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করা হেলস ৫৩ বলে আট চার ও তিন ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৮৫ রানে। সেঞ্চুরিয়ান ডি ভিলিয়ার্স জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
ঢাকার বোলারদের মধ্যে ওভার প্রতি ১০ নিচে রান দেন কেবল শাহাদাত হোসেন। মূল দুই স্পিনার সাকিব ও নারাইন মোটেও সুবিধা করতে পারেননি। নিজের প্রথম ওভারে দুই উইকেট নেওয়া রাসেল পরে করেন খরুচে বোলিং। খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি রুবেল হোসেনও।
এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট রংপুরের। সমান পয়েন্ট হলেও রান রেটে তাদের চেয়ে পিছিয়ে আছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও চিটাগং ভাইকিংস। ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রয়েছে ঢাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৮৬/৬ (জাজাই ১৭, নারাইন ২৮, রনি ৫২, সাকিব ২৫, রাসেল ১৪, পোলার্ড ৩৭*, শুভাগত ১, সোহান ৩*; নাহিদুল ৩-০-২২-০, মাশরাফি ৪-০-৩০-১, রেজা ৩-০-৩২-২, নাজমুল ৩-০-৩৫-১, শফিউল ৪-০-৩৫-১, শহিদুল ৩-০-২৬-১)
রংপুর রাইডার্স: ১৮.২ ওভারে ১৮৯/২ (গেইল ১, হেলস ৮৫*, রুশো ০, ডি ভিলিয়ার্স ১০০*; শাহাদাত ২-০-১৬-০, রাসেল ৩-০-৩০-২, সাকিব ৪-০-৪১-০, নারাইন ৪-০-৪৫-০, রুবেল ৪-০-৪২-০, অনিক ১.২-০-১৪-০)
ফল: রংপুর রাইডার্স ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: এবি ডি ভিলিয়ার্স